এম হামিদ
সরকার গঠনের চার বছর শেষে দেশে–বিদেশে নানামুখী চাপে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। গত চার বছরে দুর্নীতি, অনিয়ম, হত্যা, গুম জনদুর্ভোগ, জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি এবং নিজেদের সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলার কারণে সরকারের ব্যর্থতার পাল্লাই ভারী হয়েছে। একের পর এক কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। চলছে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা। এর সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। হলমার্ক নামের একটি অখ্যাত গ্রুপ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। ডেসটিনি নামের একটি কথিত মাল্টিলেভেল কোম্পানি একজন সাবেক সেনাপ্রধান ও প্রভাবশালীদের পৃষ্ঠপোষকতায় সাধারণ জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেছে। সরকার সমর্থকসহ বেশ কয়েকজন কারবারী দ্বারা শেয়ারবাজারের সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে এ সময়েই। সবচেয়ে বড় দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নির্মিতব্য পদ্মা সেতুর আর্থিক কেলেঙ্কারি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংক খোদ সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার লুটপাট হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। টেলিফোন খাতে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে। অবৈধ ভিওআইপির দুর্নীতির ভাগ–বাটোয়ারার বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। টেলিকমিউনিকেশন গেটওয়ে লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রেও দুর্নীতির আশ্রয়ের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকায়। এ টেলিকম ব্যবসাও পেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা, মন্ত্রী কিংবা আত্মীয়রা। সরকার সম্প্রতি ৯টি ব্যাংকের লাইসেন্স দিয়েছে। একেকটি ব্যাংকে বিনিয়োগ করতে হচ্ছে ৪০০ কোটি টাকা। ক্ষমতাসীন দলের সব পরিচিত মুখই ব্যাংকের লাইসেন্স পেয়েছে। দ্য ফারমারস ব্যাংক নামে একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্বও পালন করছেন ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। একডজন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং টেলিভিশন দেয়ার ক্ষেত্রেও নেপথ্যে রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। বিদ্যুৎ পাচ্ছে না মানুষ, কিন্তু খুঁটির ব্যবসা জমজমাট। ১০ লাখ খুঁটি কেনা হয়েছে; আরও ১৫ লাখ খুঁটি কেনা হচ্ছে।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে শক্তিশালী করা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে, ক্ষমতাধরদের বার্ষিক সম্পদ বিবরণ দিতে হবে, রাষ্ট্র ও সমাজের সব স্তরের ঘুষ, দুর্নীতি উচ্ছেদ, অনোপার্জিত আয়, ঋণখেলাপি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কালো টাকা ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, প্রতি দফতরে গণ–অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নাগরিক সনদ উপস্থাপন করা হবে। সরকারি কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে কম্পিউটারায়ন করে দুর্নীতির পথ বন্ধ করা হবে। এসব প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও চার বছরে সরকার কোনো স্থানেরই দুর্নীতি কমাতে পারেনি। ২০১২ সালে টিআইবির জরিপে বলা হয়েছে, সংসদ সদস্যদের মধ্যে ৯৭ ভাগ অনৈতিক কাজে জড়িত। এছাড়া বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) ধারণাসূচক অনুযায়ী গত বছরের তুলনায় এবার (২০১২ সাল) বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে। বিশ্বের ১৭৬টি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে ২০১২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান দুর্নীতির সূচকে আরও ২৪ ধাপ পিছিয়েছে। গত বছর বিশ্বের ১৮৩টি দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে যে সূচক করা হয়েছিল– তাতে ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী (ভাল থেকে খারাপ) বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২০। এবার ১৭৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৪তম। ২৭ থেকে স্কোর নেমে এসেছে ২৬–এ। তবে চরম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় গতবারের মতো বাংলাদেশ এবারো ত্রয়োদশ স্থানে অবস্থান করছে।
হলমার্কের তানভীর মাহমুদ আড়াই হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। বাংলাদেশের ৪০ বছরের ব্যাংকিং খাতে এত বড় কেলেঙ্কারি ঘটেনি। বছরের সেরা কেলেঙ্কারিতে পরিণত হয় সোনালী ব্যাংক থেকে হলমার্ক গ্রুপের ঋণ নেয়ার ঘটনাটি। প্রায় ২৬শ’ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে হলমার্কের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা মালিকের পূর্ব পরিচিত হওয়ায় এবং ঋণ নেয়ার বিষয়ে তিনি প্রভাব ফেলেছেন এমন অভিযোগ ওঠায় তাঁকেও এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। অভিযোগ ওঠে, ভুয়া এলসির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ইনল্যান্ড বিল পার্সেজের মাধ্যমে এক হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা আÍসাত করেছে হলমার্ক। নন–ফান্ডেড আরও এক হাজার কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগ করে তা অনুসন্ধানে কাজ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ২৭ জনের বিরুদ্ধে ৪ অক্টোবর ১১টি মামলা করেছে দুদক। এতে হলমার্ক গ্রুপের ৭ এবং সোনালী ব্যাংকের ২০ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। গত ৭ অক্টোবর হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ ও মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামকে ১৮ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয়।
সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে প্রায় ৩ হাজার তিন শ’ কোটি টাকা আত্মাসাতের অভিযোগ ওঠে ডেসটিনি গ্রুপের বিরুদ্ধে। মানিলন্ডারিং আইনে দুর্নীতি দমন কমিশন দুটি মামলায় ৩২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল হারুন–উর–রশিদ, কোম্পানির চেয়ারম্যান রফিকুল আমিনসহ ২২ জন।
২০১২ সালে দেশের অন্যতম আলোচিত ছিল রেল কেলেঙ্কারির ঘটনাটি। আর এ ঘটনায় ৫৫ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হওয়া সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের দিকে আঙ্গুল উঠে। নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও তিনি রেলমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেন। এখন রয়েছেন দফতরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে। ঘটনার তদন্তকালীন পুরো এক মাস তিনি সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারী ওমর ফারুক তালুকদার, রেলের পূর্বাঞ্চলীয় জেনারেল ম্যানেজার ইউসুফ আলী মৃধা এবং রেলের নিরাপত্তা কমান্ডেন্ট এনামুল হককে নিয়ে ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল রাতে এপিএসের ব্যক্তিগত গাড়িচালক আলী আজম খান গাড়ি নিয়ে হঠাৎ বিজিবি সদর দফতরে প্রবেশ করেন। এর পর গাড়িচালক গাড়িতে বস্তাভর্তি টাকা (৭০ লাখ টাকা) আছে বলে চিৎকার শুরু করেন। চালক দাবি করেন টাকা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বাসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। একই সময়ে সুরঞ্জিত পুত্র সৌমেন সেনগুপ্ত বিটিআরসি থেকে ‘আইসিএক্স’ (ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ) লাইসেন্সের অনুমোদন পান। তবে শেষ পর্যন্ত দুনীতি দমন কমিশন ও রেল মন্ত্রণালয়ের তদন্তে সুরঞ্জিত ও পুত্র সৌমেন নির্দোষ প্রমাণিত হন। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে ফারুক, মৃধা এবং এনামুলের অনিয়মের আলামত ধরা পড়ে।
বছরের সবচেয়ে বেশি আলোচিত ইস্যুগুলোর মধ্যে শীর্ষে ছিল পদ্মা সেতু। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্র“ত হিসেবে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করে ক্ষমতার প্রথম বছর থেকেই। কিন্তু ক্ষমতার শেষ বছরে এসেও পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করতে পারেনি সরকার। কারণ, দুর্নীতির অভযিোগ! প্রথম থেকেই দুর্নীতির অভিযোগ সরকারের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হলেও ২০১২ সালের জুনে চুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। এরপর সরকারের নানামুখী তৎপরতায় দেশের বৃহত্তম এ অবকাঠামো প্রকল্পে দাতা সংস্থাটি ফিরে এলেও এখনো জট খুলেনি পদ্মার। এখনো জানা যায়নি, পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে কি–না। তবে বছরের শেষ দিকে বিশ্বব্যাংকের মন গলাতে অভিযুক্ত ৭ জনের নামে মামলা করে দুদক। তাদের মধ্যে সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ দুজন গ্রেফতার আছেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মূলত প্রকল্পের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। সে সময় পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রকল্প চালিয়ে নেয়ার জন্য দুর্নীতি খতিয়ে দেখাসহ বেশ কয়েকটি শর্ত দেয় বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের দেয়া শর্ত না মেনে বিকল্প উৎস থেকে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এদিকে, শর্ত পালন হয়নি জানিয়ে ২০১২ সালের ২৯ জুন অর্থায়ন বাতিল করে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। পদ্মা প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সরকারের মধ্যেই প্রতিক্রিয়া হয়। বিশ্বব্যাংকের ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অর্থমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিশ্বব্যাংকের কড়া সমালোচনা করেন। ২ জুলাই জাতীয় সংসদে দেয়া এক বিবৃতিতেও দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন অর্থমন্ত্রী। ২৯০ কোটি ডলারের পদ্মা প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল করার পর এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকও (এডিবি) সরে দাঁড়ায়। জাইকা ও আইডিবিও তাদের অর্থ দেয়া থেকে বিরত থাকে। সরকার বিশ্বব্যাংককে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য চিঠি লেখার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। তবে জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সে অবস্থান থেকে সরে আসে সরকার। সংসদে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বিশ্বব্যাংকের কড়া সমালোচনার পর নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের রূপরেখা প্রকাশ করেন। ৯ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সভার বৈঠকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেয়া হয়। এ লক্ষ্যে দেশের মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহে প্রতিটি ব্যাংকে হিসাব খোলা হয়। পাশাপাশি পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ঋণ বাতিলের সিদ্ধান্তটি অন্যায্য বলে দাতাদের কাছে বিশ্বব্যাংকের বিচার দাবি করেন অর্থমন্ত্রী। এডিবি ও জাইকার পরামর্শে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতার আলোচনা শুরু করে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থায়ন বাতিলের পর বিশ্বব্যাংককে ফেরানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এই উদ্যোগ চলাকালীন বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে অভিযোগের মুখে থাকা মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেইন ছুটিতে যান। সবশেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানকে পদ্মা সেতু সংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে সরিয়ে তাকেও ছুটিতে পাঠানো হয়। পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনকে দুর্নীতি তদন্তের দায়িত্ব দিতে রাজি হয়। শর্ত পূরণ হওয়ায় গত ২০ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতু প্রকল্পে ফিরে আসার ঘোষণা দেয় বিশ্বব্যাংক। তবে দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি বলেই বিশ্বব্যাংক ফিরে এসেছে সরকারের পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হয়। এ অবস্থায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাংক অপর এক বিবৃতিতে জানায়, পদ্মা সেতু নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য সুরাহা না হলে এ প্রকল্পে তারা অর্থায়ন করবে না বলে জানায় বিশ্বব্যাংক। পদ্মা সেতুর দুর্নীতি তদন্তে গত ৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তিন সদস্যের প্যানেল গঠনের ঘোষণা দেয় বিশ্বব্যাংক। ‘দুর্নীতি ষড়যন্ত্র’ তদন্ত পর্যবেক্ষণ করতে ১৪ অক্টোবর ঢাকায় আসে বিশ্বব্যাংক গঠিত তিন সদস্যের প্যানেল। পরদিন থেকেই প্যানেলটি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকের) সঙ্গে কাজ শুরু করে। এরমধ্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান নভেম্বরে ছুটি শেষে কাজে যোগ দিলে বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ প্যানেলের ঢাকা সফর নিয়ে আবারও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। শেষে অর্থ উপদেষ্টাকে দীর্ঘ ছুটিতে পাঠানোর পর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ২য় দফায় দুদকের তদন্ত পর্যবেক্ষণে ঢাকা আসে বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ প্যানেল। তবে এ সময় দুদকের সঙ্গে মতভেদ দেখা দেয় মামলা অভিযুক্তদের সংখ্যা নিয়ে। বিশ্বব্যাংকের সুপারিশ ছিল সাবেক দুই মন্ত্রী আবুল হোসেন ও আবুল হাসানকেসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার। তবে দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি যুক্তি দেখিয়ে তাদের নাম বাদ দিয়ে ৭ জনের নামে মামলার সিদ্ধান্ত হয়। পরে একটি এফআইআর করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে মতভেদ নিয়েই গত ৫ ডিসেম্বর ফিরে যান পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা। এরপর বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি এলেন গোল্ডস্টেইন এক বিবৃতিতে জানান, পর্যবেক্ষক প্যানেলের প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করবে পদ্মা প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়টি।
রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল দুর্নীতিও ক্ষমতাসীনদের বড় মাত্রার অনিয়ম ও দুর্নীতি। এ দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে বলে পত্র–পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুকেন্দ্রের জন্য দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনছে সরকার। এতে প্রতি বছর সরকারকে ২০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০০৯–এ উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল চার হাজার একশ’ মেগাওয়াট। ওই সময় সমুদয় বিদ্যুৎ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতেই উৎপাদিত হতো। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংরক্ষণের পরিবর্তে এগুলোর প্রতি সরকারের অবহেলা ও অযত্নই প্রকাশ পায়। রাষ্ট্রীয় এসব বিদ্যুকেন্দ্র বসিয়ে রেখে ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠদের তিনটি রেন্টাল ও ১৭টি কুইক রেন্টাল বিদ্যুতকেন্দ্রের লাইসেন্স দেয়া হয়। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য কোনো ধরনের দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। নিয়ম–নীতিরও কোনো তোয়াক্কা করা হয়নি। জ্বালানি তেল ও বিদ্যুৎ খাতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট আমলের তিন অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৩৩ হাজার ৭৫৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিদ্যুতে ১১ হাজার ১৮৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং জ্বালানি তেল আমদানি করতে ২২ হাজার ৫৭১ কোটি ২২ লাখ টাকা ভর্তুকি দেয়া হয়। তেলনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভর্তুকি মূল্যে ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল সরবরাহ করতে গিয়ে বিপিসির লোকসানও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। বিপিসির হিসেবে ২০০৯–১০ অর্থবছরে তারা লোকসান দেয় দুই হাজার ৫৭১ কোটি ২২ লাখ টাকা। ২০১০–১১ অর্থবছরে এর পরিমাণ তিন গুণের বেশি বেড়ে যায়। ওই অর্থবছরে বিপিসির লোকসান হয় ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে জ্বালানি তেল খাতে ভর্তুকির পরিমাণ ১১ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় পৌঁছে।
রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল দুর্নীতি নিয়ে সম্প্রতি রাজধানীতে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনার মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে যে, বর্তমান মহাজোট সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মোট ৩৪ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। মূলত রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্যই দিতে হয়েছে এ ভর্তুকি। ৩৪ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সরকার অন্তত ২৮ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। এ টাকা দিয়ে সরকার আগামী নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী ফান্ড গঠন করেছে বলেও অভিযোগ করেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেছেন, সরকার পিডিবি’র নিজস্ব ১৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রেখে উচ্চমূল্যে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনছে। রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনলে সংশ্লিষ্ট সবার কমিশন আছে। এ কারণেই পিডিবির কর্মকর্তারাও এখন তাদের নিজেদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চেয়ে ভাড়াভিত্তিক ওইসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে।
একই অনুষ্ঠানে পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমতুল্লাহ বলেন, দেশে লুটপাট করার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে পরিত্যক্ত বাতিল মেশিন এনে এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে সরকার দলীয় লোকজন। পুরনো মেশিন হওয়ার কারণে এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মাত্রাতিরিক্ত তেল ব্যবহার হচ্ছে। অন্যদিকে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সরকার বিদ্যুৎ কিনছে। যার ফলে তিন বছরে ৩৪ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে।
মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কোটি টাকা খরচ করে আমেরিকা, লন্ডন ও সিঙ্গাপুরে রোড শো করে। কোটি টাকার রোড শো’র পর প্রায় তিন বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি দেয়া আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর একটিও বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ করা তো দূরের কথা, বিন্দুমাত্র আগ্রহও দেখায়নি। প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আর কোনো যোগাযোগও করা হয়নি বলে জানা যায়। প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে পরিচালিত এ রোড শো সম্পর্কে ওই সময়ই কড়া সমালোচনা করেছিলেন বিদ্যুৎ ও জালানি বিশেষজ্ঞরা। রোড শো’কে পিকনিক হিসেবে উল্লেখ করে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ওই সময় বলেছিলেন, রোড শো’ থেকে কিছু লোকের মানসিক প্রশান্তি অর্জন ছাড়া রাষ্ট্রের কোনো উপকার হয়নি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়নবোর্ডের তথ্যানুযায়ী ২০০৯ সালে বিদ্যুতের গড় উৎপাদন ব্যয় ছিল ২ টাকা ৪০ পয়সা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ টাকায়। বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় তিনগুণ বৃদ্ধির জন্য কুইক রেন্টাল দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। ২০০৯ সালে এ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুৎ উত্পাদন ব্যয় ছিল যথাক্রমে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ১ টাকা ৩১ পয়সা, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ১০ পয়সা, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৪ টাকা ও জ্বালানি তেলভিত্তিক কেন্দ্রে ৬ টাকা। এতে গড়ে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ হতো ২ টাকা ৪০ পয়সা। সাড়ে তিন বছরের মাথায় এসে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৬৭ পয়সায়। জলবিদ্যুৎ ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ব্যয় সামান্য বেড়েছে। তবে জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১৪ টাকা থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত। গড়ে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ এখন সাড়ে ৭ টাকারও বেশি।
পিডিবির দেয়া তথ্য মতেই ,কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য আমদানি করা যন্ত্রপাতির শতকরা ৮০ ভাগই হচ্ছে পুরাতন। নতুন যে যন্ত্রটির দাম এক হাজার কোটি টাকা, আমাদের দেশের উদ্যোক্তারা সেটা এনেছেন মাত্র দু’শ’ কোটি টাকায়। এই হিসাবে জ্বালানি খরচ ঠিক থাকলেও প্লান্টের খরচ কমে এসেছে ৫ ভাগের এক ভাগে। এই হিসাবে শতকরা আশি ভাগ কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় হচ্ছে ৬ টাকা থেকে সাড়ে ৬ টাকার মধ্যে। কুইক রেন্টালের জন্য আমদানি করা সব যন্ত্রপাতি নতুন ধরলেও ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের উত্পাদন ব্যয় হচ্ছে সাড়ে ৮ টাকা। অথচ এখানে সরকার শুরুতেই তাদের কাছ থেকে ইউনিটপ্রতি সাড়ে ১৪ টাকা করে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে।
বর্তমান সরকারের সাড়ে তিন বছরে বিদ্যুতের দাম ছয়বার বাড়ানো হয়েছে। আরও বৃদ্ধির চিন্তা–ভাবনা চলছে। বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণেই সরকার বার বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিলে ধাপ পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিদ্যুৎ বিল আগের সরকারের তুলনায় তিনগুণ করেছে। বিদ্যুতের বর্ধিত এ বিলের সঙ্গে যুক্ত হবে শতকরা ১৫ ভাগ ভ্যাটসহ অন্যান্য সার্ভিস চার্জ।
রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল দুর্নীতির পাশাপাশি পিডিবির পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো রক্ষণাবেক্ষণের নামে এখন চলছে আরেক ধরনের অনয়িম। এর নাম হচ্ছে ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথড বা ডিপিএম পদ্ধতি। কোনো ধরনের আইন ও বিধি–বিধান না মেনে যেভাবে রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের অনুমোদন দেয়া হয়েছে, ঠিক একইভাবে এখন ডিপিএম পদ্ধতিতে কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়াই ক্রয়নীতি ভঙ্গ করে শত শত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি সরাসরি আমদানি করা হচ্ছে। গ্যাসভিত্তিক ৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতি কেনার জন্য সর্বমোট ৫৬০ কোটি ২০ লাখ টাকা ছাড় করিয়ে নিয়েছে পিডিবি। কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়াই একত্রে ৫শ’ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সরাসরি কেনার নজির এটাই প্রথম। গত ৪০ বছরেও পিডিবিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি বলে জানা যায়।
সব ধরনের আইন ও বিধিবিধান ভঙ্গ করে সরকার রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদনের পাশাপাশি শত শত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি আমদানি করা হচ্ছে কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়াই। এসব দুর্নীতি নিয়ে যাতে ভবিষ্যতে কেউ কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করতে না পারে সেজন্যই একটি বিশেষ আইন করা হয়। আগামী ১০ অক্টোবর এই আইনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এরই মধ্যে সরকার আবারও এই আইনের মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদনও করা হয়েছে। এই আইনে বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর থাকা অবস্থায় সরকার বিদ্যুৎ খাতে যেসব প্রকল্প গ্রহণ ও কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে তা নিয়ে ভবিষ্যতে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না। এমনকি সরকারের এসব কর্মকাণ্ডে কোনো দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়ে থাকলেও সেই বিষয়ে কেউ ভবিষ্যতে দেশের কোনো আদালতে প্রতিকার চেয়ে মামলা করতে পারবে না। কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান এ অনিয়ম বা দুর্নীতির বিষয়ে কোনোরূপ অনুসন্ধান কিংবা তদন্তও করতে পারবে না।
দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ বিশেষায়িত মার্কিন তহবিল মিলেনিয়াম সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কয়েক মাস আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৯ জন রাষ্ট্রদূত সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, দুর্নীতির কারণে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ইমেজ দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে একজন ব্রিটিশ বিনিয়োগকারী বলেন, বাংলাদেশের বড় বড় দুর্নীতির খবরে সেদেশে বিনিয়োগ করতে আমরা ভরসা পাচ্ছি না।।