বি. ডি. রহমতউল্লাহ্
ভারতের সাথে বাংলাদেশের জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাতের চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত এদেশের জনগণকে কোনদিনই স্পষ্ট করে কখনোই কিছু বলা হয়না। অবাক হবার মতো বিষয় যে, ভারতের বিদ্যুৎ চাহিদা ২ লাখ মেঃ ওয়াটের বিপরীতে উৎপাদন মাত্র দেড় লাখ মেঃ ওয়াট। যেখানে ৫০ হাজার মেগাওয়াট অর্থাৎ চাহিদার এক–চতুর্থাংশ ঘাটতি সেখানে ‘‘বিদ্যুৎ ঘাটতিওয়ালা দেশ” ভারত বাংলাদেশকে কিভাবে বিদ্যুৎ দেবে। ভারতের পক্ষ থেকে ২৫০মেঃ ওয়াট যা পরবর্তীতে ৫০০ মেঃ ওয়াট, বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি জানা গেছে, ওই বিদ্যুৎ বিক্রির পরিমান আরও ১০০ মেঃ ওয়াট বাড়াবে। বিষয়গুলো কেমন গোলমেলে মনে হতে পারে। কিন্তু এ সম্পর্কিত কোনো কিছুই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে কখনই জানানো হয় না। বরং ভারত এ সব প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদ্যুৎ–করিডোরসহ যাবতীয় সুযোগ–সুবিধা নেবে তাই তারা চেষ্টা করছে এবং বাংলাদেশের বর্তমান সরকার অকাতরে সেই চাহিদাগুলো পূরণ করছে। পরিবর্তে বাংলাদেশের তিস্তার নদীর পানিবন্টনসহ অমীমাংসিত দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোর কোনো সুরাহাই করা হচ্ছে না। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব বিষয়গুলো কখনো উত্থাপনই করা হয় না। বরং সবশেষ বিদ্যুৎ–করিডোর দেয়ার সিদ্ধান্তসহ অতীতে যে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, তা বাংলাদেশের স্বার্থ বিকিয়েই দেয়া হয়েছে।
ভারতে সুন্দরবনের চাইতে অনেক ছোট বন, আবাদী জমি রক্ষার জন্য জনগণের আন্দোলনের মুখে ও ভারতের পরিবেশ দপ্তর কর্তৃক ছাড়পত্র না পাওয়ার কারণে একাধিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ সরকারের নতজানু অবস্থানের কারণে ঝড়–জলোচ্ছ্বাসের আঘাত থেকে লক্ষ লক্ষ প্রাণ রক্ষাকারী প্রাকৃতিক বর্ম সম্পুর্ন ধ্বংসের মুখে নিক্ষেপ করে এক অসাধারণ প্রাকৃতিক স্বর্র্গ সুন্দরবনের রামপালে নির্মাণ করা হচ্ছে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। অনবায়নযোগ্য এবং সবচেয়ে বিষাক্ত জীবাস্ম জ্বালানী কয়লা দিয়ে ১৩২০ মেঃ ওয়াটের বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেবার পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা এও জানি যে, গত ১৩ মার্চ ভারতের ন্যাশনাল গ্রীণ ট্রাইব্যুনাল কর্ণাটকে এনটিপিসির প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশ ছাড়পত্র স্থগিত করেছে। স্থগিত করবার কারণ হিসেবে ট্রাইব্যুনাল বলেছে, (১) পরিবেশ ছাড়পত্র পাবার জন্য এনটিপিসি প্রকল্প এলাকার জমি সম্পর্কে মিথ্যা ও বিভ্রান্ত্রিকর তথ্য দিয়েছে, দুই ফসলী জমিকে অনুর্বর ও পাথুরে জমি বলে চালিয়ে দিয়েছে। (২) ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনার প্রণয়নের আগেই পরিবেশ ছাড়পত্র দেয়া হয়। (৩) কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিকর প্রভাব অনেক কম করে দেখানো (৪) স্থানীয় জনগণের মতামত উপেক্ষা করা।
এনটিপিসির বিরুদ্ধে যেসকল গুরুতর অভিযোগ ভারতের কর্ণাটকের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে উত্থাপিত হয়েছে, বাংলাদেশের সুন্দরবনের কোলে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে অভিযোগ তার চাইতে আরও অনেক গুরুতর অনিয়ম, তথ্যগোপন, প্রতারণা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারের তথ্যপ্রমাণ আছে।
ভারত–বাংলাদেশ বিদ্যুৎ চুক্তির ধারাসমূহ একটুও বিস্ময়ের সৃষ্টি করে না। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সংকট মিটানোর নামে একটির পর একটি যে ধরনের রহস্যময় পদক্ষেপ নিচ্ছে। মিলিত অপচেষ্টায় এদেশের জ্বালানী ও বিদ্যুৎ সংকট বাড়বে কিন্তু কোনোদিন কমবে না। বরং সম্ভাব্য সমাধানের সমস্ত পথকে পরিহার করে এক কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এদেশের জ্বালানী ও বিদ্যুৎখাতে বিদেশী আগ্রাসনের তীব্রতা বাড়িয়ে তুলবে। একই ধারাবাহিকতার ২০১২–এর ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারতের ও বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সচিব পর্য্যায়ের ষ্টিয়ারিং কমিটির ২য় সভায় সম্মতিসূচক চুক্তি সম্পাদিত হয়। আর এবার ২০১৪–এর ২ এপ্রিল ষ্টিয়ারিং কমিটির ৭ম সভায় ভারতের বিদ্যুৎ সচিব রামপাল ঘুরে এসে ওই প্রকল্প দ্রুত করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ভারতে সাথে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানী বিষয়ক এ চুক্তি বা সমঝোতা সভাগুলোর বিষয়াদিকে এ সরকারের ক্ষমতায় আসার পর থেকে জ্বালানী ও বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সার্বিক পদক্ষেপ থেকে আলাদা করে দেখলে তা এক মারাত্মক ভুল চিন্তা হবে। এটি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
আজ অত্যন্ত উচ্চদামে ও এক অনৈতিক পন্থায় ভারত থেকে শুধু বিদ্যুৎ আমদানীই নয়,ভারতের নিম্নমাণের কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বানানো সহ, ভারতের অচল পূঁজিকে এদেশে চালান করে সচল করতে এবং নবায়নের নামে এদেশের বিদ্যুৎ খাতে ভারতের আক্রমনকে আহবান করা হচ্ছে।
এবার আসা যাক ২০১২ ভারতের সাথে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিষয়ক সমঝোতা চুক্তি সম্পর্কে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালীন সময়ের ৫০ ধারা সমঝোতা বিষয়ে পার্লামেন্টে আলাপ হয়নি বিধায় দেশবাসীও এ বিষয়ে খুব স্পষ্ট করে কিছু জানে না।
২০১২ সালে ভারত–বাংলাদেশ সচিব পর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটির সভায় যে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে উল্লেখ করা আছে তা হলোঃ
ক) বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও ভারতের এনটিপিসির যৌথ উদ্যোগে খুলনার রামপালে ২ ঢ ৬৬০ মেঃ ওয়াট একটি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মিত হবে।
খ) বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও এনটিপিসি যৌথভাবে বাংলাদেশের একটি পুরনো বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সংস্কার করবে।
গ) ভারত থেকে ২৫০ মেঃ ওয়াট বিদ্যুৎ আমদানীর জন্য ভারত–বাংলাদেশের মধ্যে মোট ১৩০ কিঃমিঃ গ্রীড লাইন নির্মাণ,যার মধ্যে ৪৫ কিঃমিঃ লাইন পড়বে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। এ লাইন ভরতের টাটা ও রিলায়েন্স অর্থ্যাৎ যে কোন বেসরকারি সংস্থা ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু বাংলাদেশের কেউ পারবে না।
আর এবারের ২ এপ্রিল বিদ্যুৎ সচিবের সফরে যা পেলাম তার একটা বিবরণ দেয়া যাক: (ক) এ বছরের মধ্যেই নাকি বাংলাদেশ ত্রিপুরা থেকে আরও ১০০ মে:ওয়াট বিদ্যুৎ পাবে। (খ) ভারতের ৫টি বিদ্যুৎ প্রকল্পে ”প্রতীকী” বিনিয়োগের সুযোগ পাবে। আসলে এই প্রতীকী বিনিয়োগের মর্মার্থ কি বোধগম্য নয় (গ) এছাড়াও বাংলাদেশ–ভারত–নেপালের মধ্যে এবং বাংলাদেশ–ভারত– ভূটানের মধ্যে আন্ত:দেশীয় সঞ্চালন লাইন (বিদ্যুৎ–করিডোর) গড়ে তোলার কাজ নাকি শুরু হয়েছে। আগে থেকে এ বিষয়ে কোনো কিছুই জানানো হয়নি। (ঘ) নেপালের দুটি প্রকল্পে ভারতীয় একটি কোম্পানীর উৎপাদিত ১২০০ মে:ওয়াট থেকে বাংলাদেশকে ৫০০ মে:ওয়াট কেনার সুযোগ দেয়া হবে (ঙ) বাংলাদেশ–ভারত–নেপাল–ভূটান এ দেশগুলোর মধ্যে যে উপ–আঞ্চলিক ”পাওয়ার ট্রান্সমিশন হাইওয়ে” এর করিডোর চিহ্নিত করা হবে।
এসব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভারতে তাদের হাজার হাজার মে:ওয়াট বিদ্যূৎ ঘাটতি মেটাতে নিজেদের দেশে নেবার এর চেয়ে বড় সুযোগ আর কোথায় পাবে? বিদ্যুৎ নিয়ে ভারতের দুটি বড় বিপদের জন্য চাহিদা মিটানো যাচ্ছে না। নেপাল ও ভূটান থেকে জোর করে তাদের জলবিদ্যুৎ আনায় বিষয়ে ওদের কোন বিরোধিতা নেই। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে কোন পথ দিয়ে নিয়ে যাবে সে ব্যাপারে কোনোই স্পষ্ট অবস্থান জানানো হয়নি। ভারতের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত বিদ্যুৎ নেয়া খুবই ব্যয়বহুল, বলতে গেলে অসম্ভব। কিন্তু এ কাজটি করিয়ে নেয়া হচ্ছে বাংলাদেশের স্বার্থ বিপন্ন করে খুবই স্বল্প বিনিয়োগে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ এর বিনিময়ে কি পাবে সে বিষয়ে ঢাকার কর্মকর্তারাও এখন পর্যন্ত অবগত নন।
এবার আসা যাক ভারত কর্তৃক ১৩২০ মেঃ ওয়াটের কয়লা দিয়ে চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মানের অসম চুক্তি প্রসঙ্গে, যা ২০১২ –এর সফরের সময় হয়েছিলো। বি.এন.পি আমলে শেষ দিকে ২০০৬ সালে ভারত বাংলাদেশের কয়লা ব্যবহার করে দিনাজপুরে (২ X৫০০) = ১০০০ মেঃ ওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন ও ঈশ্বরদীতে গ্যাস/কয়লা দিয়ে ৫০০ মেঃ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন স্থাপন করতে তৎকালীন বি.এন.পি সরকার এক অসম চুক্তির মাধ্যমে প্রায় স্থাপন করতে যাচ্ছিল, তখন আর্র্থিক লাভালাভের স্বার্থ দ্বন্ধে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সফল হয়নি। এখন প্রশ্ন অসম চুক্তি কেন? এজন্য যে, ভারত এদেশের আমলা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের দূর্বলতার সুযোগে চুক্তি সম্পাদনে যে কাজগুলি করিয়ে নিতে চাচ্ছিল তা হলো–
ক) ভারত তাদের স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র অব্যাহত গ্যাস ও কয়লা পেতে বাধ্য– অর্থাৎ বড় গ্রাহক বিধায় এ সুযোগ্য অগ্রাধিকার গ্রাহক হিসেবে বিবেচিত হবে।
খ) এর অধীনে যদি কোন বড় শিল্প/কারখানা থাকে যেমন টাটা একটি বড় স্টিল ইন্ডাস্ট্রি স্থাপন করতে যাচ্ছিল, তাহলে উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রথমেই অগ্রাধিকার গ্রাহক হিসেবে ওই কারখানাই পাবে।
গ) বিদ্যুৎ উৎপাদনে যদি বাংলাদেশের কয়লা ও গ্যাস ব্যবহৃত হয়, তবে সেক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের বিক্রয় মূল্য হবে কয়লার ক্ষেত্রে যখাক্রমে ৭ টাকা কয়লা ও গ্যাসে ৪ টাকা – যা ২০০৫ সালে আমাদের হিসেবে বিউবোর্ড কর্তৃক উৎপাদন ব্যয়ের দ্বিগুন।
তাদের ওই অভিযাত্রা জনগণের আন্দোলনের মুখে ব্যর্থ হলেও আজ তারা এর চেয়ে ও অনেক বেশী গুনে সফল।
চুক্তির আরেকটি ধারা দেখলে বোঝা যায়, এ কেন্দ্র বানাবার জন্য ভারত বাংলাদেশকে অর্থ ঋণ দিবে। তারই স্বার্থে ওই ঋণ ব্যয় করা হবে। এই ঋণ বাংলাদেশের কোনো উপকারে তো লাগবেই না বরং বাংলাদেশকে ঋণগ্রস্ত করে সেই অর্থে কাজ করিয়ে নেবে ভারত।
আরও একটি বিষয়, ভারতে উত্তোলিত কয়লার ধরণ বিভিন্ন রকম আছে এবং তার অধিকাংশেরই মান অত্য নিম্ন মানের। যা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে সালফেট ও কার্বন বেশী বিধায় পরিবেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করে। মূলতঃ এ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের মাধ্যমে অতিরিক্ত কার্বন উদগীরনের জন্য কোপেন হেগেনের পরিবেশ সংক্রান্ত শীর্ষ সভায় চীন ও ভারত প্রচন্ড সমালোচিত হয়েছিল। কাজেই ভারত তার আমাদের মতো দেশগুলো যারা স্পর্শকাতর দেশ হিসেবে বিবেচিত বিধায় ভবিষ্যতে নিম্নমানের কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করা বিপজ্জনক।
এছাড়া বিদ্যুতের মূল্যের বিষয়ে কোথাও স্পষ্ট করে বলা হয়নি। এমনভাবে কথাবার্তা বলা হচ্ছে যেন এটা কিছুই না, পরে হিসেব করে দেখা হবে। এ বিষয়ে নির্দ্ধিধায় বলা যায়, এর মূল্য ভারতই নির্ধারণ করবে এবং কিছুতেই প্রতি ইউনিট ১০ টাকার নীচে হবে না।
বিদ্যুৎ সংকট সমাধানের ন্যায্য পদক্ষেপগুলো বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ইতোধ্যেই বলা হয়েছে যে, এসব সিদ্ধান্তগুলো বাংলাদেশের জন্য কতবড় স্বার্থবিনাষী। পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংস্কারের বিষয়ে দীর্ঘদিন বাংলাদেশের বিশষজ্ঞদের সুস্পষ্ট পরামর্শ রয়েছে। কিন্তু ভারতের স্বার্থে এ কাজ করা যায়নি, বরং বাংলাদেশের স্বার্থ ভারতীয় কোম্পানী এটিপিসি দেখভাল করছে বলে একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু এটা করা হচ্ছে কার স্বার্থে?
১১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রীড বানিয়ে ২৫০ মেঃ ওয়াট বিদ্যুৎ আমদানীর বিষয়টি যে কতবড় ধোকাবাজি এটি যে কেউ বলে দিতে পারবে। সোজা সাপটা হিসেবে ২৫০ মেঃ ওয়াট একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে সর্বাধিক প্রয়োজন ১০০০ থেকে ১২৫০ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ তা বানাতে পারে মাত্র ২ বছর সময়ের মধ্যে, সেখানে গ্রীড বানিয়ে বিদ্যুৎ দেয়া হবে ৪ বছর পরে। যারা ইতোমধ্যেই বিকিয়ে গেছেন তারা চীৎকার করে উঠবেন যে আমাদের দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গ্যাস কই, কয়লা কই। কিন্তু এ বিষয়টি তাদের জানা নেই যে, বাংলাদেশের এ ধরনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে এবং রয়েছে সমস্ত সম্পদ। কিন্তু যার অভাব তা হচ্ছে – দেশের স্বার্থরক্ষায় সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ। ভোক্তা হিসেবে আমাদেরই দায়িত্ব এ দেশবিরোধী চুক্তি যেন বাস্তবায়ন না হয়, সেদিকে নজর রাখা। কারণ আমাদের আছে মানসম্মত প্রচুর গ্যাস, কয়লা, সূর্য্য, বাতাস ও পানি। এত সম্পদ একসাথে বিশ্বের খুব কম দেশেই আছে। কিন্তু এগুলোকে কাজে লাগিয়ে মানসম্মতভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে জনগণের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেবার জন্য যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সততার প্রয়োজনে, তা আমাদেরকেই আজ খুঁজে বের করতে হবে। শুধুমাত্র এই একটি বিষয়ের অভাবেই আজও আমরা স্বয়ম্ভর রাষ্ট্র হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারিনি।।