শাহাদত হোসেন বাচ্চু
এবারের এই বসন্তে, এখন বাংলাদেশে প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। মানুষের রক্ত লাল করে দিচ্ছে রাজপথ, মাঠ, প্রান্তর, শস্য ভূমি– এমনকি গৃহাভ্যন্তরও। আক্রান্ত হচ্ছে, বাস, রিক্সা, গাড়ী, ট্যাক্সি, দোকান–পাট, ব্যাংক–বীমা, থানা–আদালত মায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া হচ্ছে। অকাতরে খুন হয়ে যাচ্ছে বৃদ্ধ, তরুণ, যুবা, শিশু–কিশোর–নারী। কারো জীবনের এতোটুকু নিরাপত্তা নেই। কার্যতঃ গোটা বাংলাদেশ এখন অঘোষিত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিনত হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার এবং শাসকশ্রেনীর অন্য অংশ বিএনপি সাংঘর্ষিক রাজনীতিতে ব্যস্ত। অন্যদিকে, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে জামায়াত– এবং সরকার মানুষকে অকাতরে মারার ‘লাইসেন্স’ পেয়ে গেছে। জামায়াত ঝাঁপিয়ে পড়ছে পুলিশ ও জনগণের ওপর এবং আত্মরক্ষার নামে পুলিশ অকাতরে গুলিবৃষ্টি করছে। উভয়পক্ষের শিকার জনগণ এবং কার্যত: গোটা দেশ এখন এই ভয়ংকর সন্ত্রাসের কাছে জিম্মী হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের চরম উর্ধগতি, নিরাপত্তাহীনতা এবং নানা সংকটে দিশেহারা ১৪ কোটি মানুষ এই উপদ্রুত ভূ–খন্ডে প্রতি মূহুর্তে মৃত্যুভয়ে আতঙ্কিত।
জামায়াতে ইসলামী বনাম রাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘটিত এই অঘোষিত যুদ্ধের বলি হয়ে ইতিমধ্যে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। শতশত প্রতিষ্ঠান, যানবাহন ধ্বংস হচ্ছে জামায়াতের উন্মাদনার শিকার হয়ে। জামায়াত আবার তার হিংস্র নখ–দন্ত বের করে আবার স্বরূপে আবির্ভূত হয়েছে। অন্যদিকে, জামায়াত দমনের নামে সরকারের অব্যাহত দমন–পীড়নের শিকার হয়ে নিরীহ জনগণ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এরকম একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি ১৯৭১ সালের মার্চে নিষ্ঠুর গণহত্যায় মেতে ওঠার আগে প্রেক্ষাপটটি তৈরী করছিলো, জনগণের ওপরে প্রতিদিন আক্রমন–নৃশংসতা চালিয়ে। ৪১ বছর পরে জামায়াত, প্রধান বিরোধী দল এবং সরকার মিলে কি ইতিহাসের চাকা ঘুরিয়ে দিতে চাচ্ছে অবিনাশী সেই মার্চের দিকে?
ভারত–পাকিস্তান–বাংলাদেশ’র ইতিহাসের দিকে তাকালে পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, জামায়াত নামক দলটি জন্ম থেকেই ধর্মকে পুঁজি করে বিভিন্ন সময়ে শাসক দল, বিরোধী দল অথবা আন্তর্জাতিক শক্তিধর দেশগুলোর ঘুঁটি হিসেবে জনগণের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে। স্বাধীনতার পরে অনিবার্য বিচারের হাত এড়িয়ে সামরিক শাসকদের লালন–পালনে এখন বাংলাদেশে তারা বিষবৃক্ষে পরিনত। শেখ মুজিবুর রহমানের আমলেই তারা সাধারণ ক্ষমা পেয়ে যায়। কখনও আওয়ামী লীগ, বিএনপি অথবা জাতীয় পার্টির সাথে মিত্রতায় অবতীর্ণ হয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার পাশাপাশি স্বাধীন বাংলাদেশে গত ৩৫ বছর ধরে তারা ক্ষমতার ঘোষিত বা অঘোষিত অংশীদার হিসেবে শাসক–শোষক শ্রেনীর প্রতিনিধিত্ব করছে। সেই অভিন্ন স্বার্থে কখনও সামরিক শাসকদের সাথে, কখনও আওয়ামী লীগ কখনও বিএনপি’র মাধ্যমে তারা প্রবল ক্ষমতাধর।
২০০৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে তরুন জনগোষ্ঠি এ কারনে ভোট দিয়েছিলো যে, নির্বাচনী মেনিফেষ্টোয় তারা ওয়াদা করেছিলো, নির্বাচিত হলে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার করবে। ২০১০ সালে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ১৯৭৩ সালের আইন অনুযায়ী সরকার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। স্বভাবত:ই স্বাধীনতার প্রায় ৪০ বছর পরে এই বিচার কাজে গঠিত ট্রাইব্যুনাল জনগণের মধ্যে বিপুল উদ্দীপনার সঞ্চার করে।
স্মৃতি যদি প্রতারণা না করে, ট্রাইব্যুনাল গঠনের পরে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের একটি মন্তব্য মনে করিয়ে দিতে চাই। টেলিভিশনে দেখা ও শোনা সেই বক্তব্য হুবহু উদ্বৃত করতে না পারলেও সার কথা ছিলোঃ তারা একটি প্রতীকি বিচার অনুষ্ঠিত করতে যাচ্ছেন। জামায়াতের সাথে অতীতে আওয়ামী লীগের সখ্যতার কারনে দলের মুখপাত্র সৈয়দ আশরাফের মুখে উচ্চারিত এই বক্তব্য সচেতন মহলের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তীব্র প্রতিবাদের মুখে ক্ষমতাসীন মহল এ নিয়ে পরবর্তীতে আর উচ্যবাচ্য করেনি।
কিন্তু সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে, বিচার কার্যক্রমের শুরুতে প্রসিকিউসন নিয়োগ, বিতর্কিত চিফ প্রসিকিউটর নিয়োগ, তদন্ত প্রক্রিয়া, অপ্রতুল লজিষ্টিক সাপোর্ট – সর্বোপরি তদন্তের দীর্ঘসূত্রীতা, সকল বিষয়েই নানা সন্দেহ ও বিতর্কের জন্ম দিতে থাকে। এই বিতর্কের কবলে ট্রাইবুনালের একজন বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে হয়। এর মধ্যে চলতি বছরের শুরুতে পলাতক (যার পলায়নের ঘটনাও রহস্যজনক!) বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনাল প্রথম রায়টি ঘোষনা করে। পরবর্তীকালে কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন রায়ে গোটা দেশের জনগণের মধ্যে আবারও সংশয় ও অবিশ্বাস দানা বাঁধতে শুরু করে।
এটা খুবই বিষ্ময়কর যে, দীর্ঘ ৪০ বছর পরে শুরু হওয়া মানবতা বিরোধী এই বিচার সংঘটনের ক্ষেত্রে সরকার, জামায়াতের অন্তর্গত আর্থিক শক্তি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক মুরুব্বীদের বিবেচনায় নেয়নি– নাকি নিতে চায়নি? একে তো দেশের প্রধান বিরোধী দলের সাথে জামায়াত জোটবদ্ধ, অন্যদিকে, আন্তর্জাতিকভাবে লবিং ও বিদেশী প্রচার মাধ্যমে তারা এই বিচারকে অনেকটাই বিতর্কিত করে তোলার কাজটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে।
বিষ্ময়কর বলেছি এইজন্য যে, সরকারের মতো মহাশক্তিধর প্রতিষ্ঠান গোলাম আজম, নিজামী, মুজাহিদ গংদের বিচারটি অমন সাদামাটা ভাবে শুরু করলেন কেন? কেন আন্তর্জাতিক শক্তির সমর্থন, আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যম, নিজস্ব প্রচার মাধ্যম, জনগণের সমর্থন– এ সব বিষয়ে বিবেচনায় নেয়া হয়নি। এমনকি, বিচার শুরুর আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসার আমন্ত্রণটুকু পর্যন্ত জানানো যেত এবং যদি এতে কেউ না আসতো বা বিচারের বিরোধিতা করতো, তাহলে তখনই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যেতো। তাহলে জনগণের এই সন্দেহ কি ঠিক, এই বিচারের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ বিশেষ কোন রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের চেষ্টা করছিলো? আড়াল করার চেষ্টা চলছিলো চার বছরের সীমাহীন ব্যর্থতা, দুর্নীতি এবং শোষন?
একসময় ক্ষমতা বদলের ক্ষেত্রে শাসক বা সুবিধাবাদী বাজনীতিকরা ‘প্রাসাদ ষড়যন্ত্র’কে মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতো। জনগণ থাকতো হিসেবের বাইরে। ১৯৭৫’র রক্তক্ষয়ী সামরিক অভ্যূত্থান পর্যন্ত সেই প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের রূপটি জনগণ অবলোকন করেছে। আধুনিক কালে শাসক শ্রেনীর চক্রান্ত জনগণকে বাইরে রেখে নয়। ধর্ম, সাম্প্রদায়িক বা জনপ্রিয় কোন ইস্যুতে উন্মাদনা সৃষ্টি করে জনগণকে তাদের চক্রান্তের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলে। এর মধ্য দিয়ে শাসক শ্রেনী তাদের নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের জন্য জনগণের রক্ত ঝরাতে একটুও দ্বিধা করে না।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকালে এর সারবত্তা বোঝা যাবে। শাসক শ্রেনীর বর্তমান সংকটটি তাদের শ্রেনীগত এবং ক্ষমতা দখলের হলেও, দেশের জনগণের একটি বড় ও উল্লেখযোগ্য অংশকে তারা তাদের চক্রান্তের মধ্যে জোর করে ফেলে দিয়েছে এবং সংকটের মূল আবর্তে জড়িয়ে ফেলেছে। পরিনামে প্রতিদিন মায়ের কোল খালি হচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। এর পাশাপাশি ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা সৃষ্টি করে বর্তমান ও অতীত শাসকশ্রেনী তাদের সমস্ত অপকর্ম এবং লুটপাট ধাপাচাপা দেবার প্রয়াস চালাচ্ছে।
বাংলাদেশের ৪১ বছরের ইতিহাসে শাসক শ্রেনী এবং প্রতিটি সরকার জনগণের ওপর যে শোষন–নির্যাতন–অবিচার চালিয়ে এসেছে, ইতিহাসের অনিবার্য পরিনতি হিসেবে সেই ক্ষোভের আগুন থেকে গত ৫ ফেব্র“য়ারি শাহবাগ চত্বরে যে আন্দোলনের জন্ম নিয়েছে, সে আন্দোলনকে ভীত শাসকশ্রেনী চক্রান্তের মাধ্যমে এমন জায়গায় দাঁড় করিয়েছে, যাতে এটি বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি দু’পক্ষই এ আন্দোলনকে নিজেদের স্বার্থে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছে। বিএনপি এখন এটিকে ‘ফ্যাসিবাদী’ বলছে। আওয়ামী লীগ সন্তুষ্ট এই কারনে যে, সৃষ্ট এই আন্দোলনের ফলে জনগণের দৃষ্টি তাদের মতে, এখন একমুখী হয়ে গেছে, এটাও আওয়ামী লীগের এক মনস্তাত্বিক সংকট। গত ৪ বছরে তাদের ভয়াবহ দুর্নীতি, শোষন, সাম্রাজ্যবাদের নির্লজ্জ তোষন– এই আন্দোলনের ডামাডোলে আপাতত চাপা পড়ে গেছে বলে তারা মনে করছে।
মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে প্রথমে পলাতক বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসি, পরবর্তীকালে যখন কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন– দেশবাসীকে একটি অশুভ আঁতাতের মেসেজ দিয়েছিলো, সেটি রুখে দেয়ার জন্যই তরুন প্রজন্ম শাহবাগে যে আন্দোলনের জন্ম দেয়, দেশবাসী তাতে সামিল হয়ে পড়ে। পরোক্ষভাবে হলেও এ আন্দোলন ছিলো মূলত: সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, যাতে করে কোন অশুভ আঁতাত জামায়াতে ইসলামের সাথে গড়ে না উঠতে পারে এবং প্রহসনের বিচারের বদলে সঠিক বিচার নিশ্চিত হয়।
স্পষ্টতঃ বিএনপি দলীয় স্বার্থ এবং জামায়াতের প্রতি আগ্রহ, আনুগত্যের কারনে জনগণের এই মেসেজ অনুধাবনে ব্যর্থ হয়ে এবং জামাযাতের রাজনৈতিক তল্পিবাহকের মতো জনগণের বিরুদ্ধেই অবস্থান গ্রহন করে। ফলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেবে, রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি তাদের ভূমিকা পালনে চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিলো। জামায়াতের সঙ্গে অনুগামী হয়ে তাদের বিশেষ কোন রাজনৈতিক লাভ হবে, তাদের ভোটের বাক্সে ভোট বাড়বে – এটা ভাবার কোন কারন নেই। জামায়াত ইসলামীর ডাকা ৩ ও ৪ মার্চের হরতালের পর ৫ মার্চ তাদের দেয়া হরতাল যে জামায়াতের অন্ধ অনুকরণ, এটা অনুসরন দেশের মানুষের কাছে এখন একেবারেই স্পষ্ট।
এর ফলে শাসক দলের জন্য সুযোগ তৈরী হয়েছে শাহবাগের আন্দোলনকে আরো বিভ্রান্ত করার। বিএনপি’র সমর্থনে জামায়াত তার হিংস্র চেহারা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও জনগণের ওপরে। এই সুযোগে সরকার এই আন্দোলন দমনের নামে পাইকারীভাবে হত্যা করা শুরু করেছে মানুষকে। জামায়াতের হত্যার শিকার হচ্ছে পুলিশ সদস্যরা, হামলার শিকার হচ্ছে নিরীহ জনগণ–অন্যদিকে পুলিশের গুলিতে নিহত হচ্ছে একদিকে, জামায়াত শিবির কর্মী এবং অন্যদিকে, নিরীহ জনগণ।
শাহবাগের বিক্ষোভ পরোক্ষভাবে সরকারের বিরুদ্ধে শুরু হলেও তাদের ঘরানার বামপন্থী দলগুলো ও বুদ্ধিজীবিরা আন্দোলনকে সরকারের বিরোধিতার দিকে এগোতে দেয়নি। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের লক্ষ্য ছিলো এই আন্দোলন যাতে ফাঁসির দাবীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, অন্য কোন সমস্যার দিকে আন্দোলনকারীদের দৃষ্টি যাতে নিবদ্ধ না হয়। কাজেই যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই এবং পরে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে, এই দুই দাবীর মধ্যে আন্দোলনকে আটকে রেখে আওয়ামী লীগ এখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত।
এর বিপরীত রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধতার কারণে কৌশল গ্রহনের ফলে জনগণের এখন ত্রিশংকু অবস্থা। তারা মারা পড়ছে পুলিশ–বিজিবি’র গুলিতে, জামায়াতে’র নৃশংস আক্রমনে এবং সারাদেশ পড়ছে চরম নৈরাজ্যে কবলে। স্পষ্টতঃ সরকারের পুলিশ বাহিনী যে কাউকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছে। সন্দেহ নেই, জামায়াত শিবির সশস্ত্র আক্রমন করলে তারা আত্মরক্ষার জন্য গুলি করবে– এ যুক্তি মেনে নিলেও গত ৪ বছরে, পুলিশ বাহিনী যেভাবে বিরোধী আন্দোলন দমন করেছে, তার সাথে এখনকার পরিস্থিতির খুব বেশি অমিল নেই।
বোঝাই যাচ্ছে, আগামীতে জনগণের দাবী নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে যে সব আন্দোলন–সংগ্রাম রাজপথে সংঘটিত হবে, অতীতের মতো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ধুঁয়া তুলে পুলিশ দমন–পীড়ন অব্যাহত রাখবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। বাংলাদেশের পুলিশ “লাইসেন্সড টু কিল” এই ক্ষমতা পেয়ে গেছে আওয়ামী লীগ সরকারের হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য। শাসকশ্রেনীর দুই প্রধান অংশ এভাবে নিজেদের চক্রান্তমূলক তৎপরতার সঙ্গে জনগণের বিভিন্ন অংশকে যে ভাবে জড়িয়ে ফেলেছে, সেই মহা সংকটময় পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এখনই না ভাবলে দীর্ঘস্থায়ী বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।।